'ডেড জোন' হচ্ছে পানির তলদেশে সৃষ্ট এমন একটি অঞ্চল যেখানে অক্সিজেনের ঘনত্ব অত্যন্ত কম। অক্সিজেনের অভাবজনিত কারণে সৃষ্ট এই অবস্থাকে Hypoxia- ও বলা হয়, যার অর্থ পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ হ্রাস পাওয়া। একারণে 'ডেড জোন' Hypoxic Zone নামেও পরিচিত।
অক্সিজেনের অভাবজজনিত কারণে এসব অঞ্চলে কোনো মাছ বা প্রাণি মারা যায় বা এসব অঞ্চল ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। বলতে গেলে সেসব জায়গা Biological deserts এ পরিনত হয়।Hypoxic zones সাধারণত প্রাকৃতিকভাবেই তৈরি হয়। তবে সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এটা ভেবে চিন্তিত যে, মানবজাতির কর্মকাণ্ডের জন্য এসব এলাকা বেশি পরিমাণে সৃষ্টি হচ্ছে বা আয়তনে বৃদ্ধি পাচ্ছে।এক্ষেত্রে অনেক ফিজিক্যাল, কেমিক্যাল ও বায়োলজিক্যাল ফ্যাক্টর জড়িত, যাদের মিলিত ক্রিয়ায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে।
ছবি উৎসঃ teachoceanscience.net
তবে প্রাথমিকভাবে পরিশোষক পদার্থের দূষণকে ( Nutrients pollution) প্রধান কারণ হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। স্থলভাগ হতে মাত্রাধিক পরিশোষক পদার্থ (Nutrients) যখন প্রবাহিত হয়ে নদী বা সাগরে পড়ে তখন এই পুষ্টি উপাদানগুলো প্রচুর অ্যালজি জন্মাতে সাহায্য করে। এগুলো একসময় পঁচতে শুরু করে( Decomposition)। এতে প্রচুর অক্সিজেন প্রয়োজন হয়, যার ফলশ্রুতিতে জলজ জীবগুলো তাদের প্রয়োজনীয় অক্সিজেনও পায়না।
Dead zones তৈরির আরো বড় একটি কারণ হচ্ছে কৃষিক্ষেত্রে মাত্রাধিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার। এগুলো প্রবাহিত হয়ে সমুদ্রে গিয়ে পড়লে সেখানে অক্সিজেন ভয়ংকরভাবে হ্রাস পায়, যা প্রাণের অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ।
পৃথিবীজুড়ে বহু Dead zones আছে। যার মধ্যে The Great Lakes, Northern Gulf of Maxico,The Baltic sea, Lake Erie বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বিজ্ঞানীরা বিশ্বব্যাপি এপর্যন্ত ৪১৫ টি ডেড জোন শনাক্ত করেছেন। আরো ২৩৩ টি এলাকা নিয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।উল্লেখ্য যে, অক্সিজেনের চরম অভাব সত্ত্বেও Dead zones এ কিছু ব্যাকটেরিয়া বেঁচে থাকতে পারে।
তথ্যসুত্রঃ ১। http://nationalgeographic.org/encyclopedia/dead-zone/
২।http://oceanservice.noaa.gov/facts/deadzone.html
লেখকঃ মেহেদি হাসান সাইম
ওশানোগ্রাফী, ইনস্টিটিউট অফ মেরিন সায়েন্সেস এন্ড ফিশারিজ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।